সৈয়দ রুম্মান
সময়কেই শুধু চেনা হলো না: সৈয়দ রুম্মান |
তোমাদের পাড়ায় অতিথি হতে বললে, হলাম।
চারদিক থেকে এলো ধুন্ধুমার ফানুস।
নিজের শরীরের উপর নিজেই চেতনার হুল ফোটাই — নাহ, আমিই তো!
চারদিক থেকে এলো ধুন্ধুমার ফানুস।
নিজের শরীরের উপর নিজেই চেতনার হুল ফোটাই — নাহ, আমিই তো!
কেউ কেউ বলল, এভাবেই ঘুরাতে হয় সমাজের চাকা; মাইরি আপনি না হলে...মুখের স্বাদ এখন টের পাই...আহা কী ঘুম...!তোমাদের পাড়ার প্রতিটি কার্নিশে দেখি উচ্ছ্বসিত জীবন।
তোমাদের পাড়ায় হয়ে উঠলাম অবিসংবাদিত কন্ঠ, বলতে পারি — ফাইয়াকুন।
বিনয় সেই দিনটিকে করেছিল মহামানবিক। মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়া লালা ছিলো কারো কারো কাছে আবে যমযম।
প্রাপ্তি এসে সমবেত হয়েছিলো তোমাদের চোখে।
করমর্দন, স্কন্ধ-মিলন ও সুবাসিত শব্দকে পেরিয়ে বিদায়টি ছিলো অভেদ্য।
শুনেছি তোমাদের আর ফিরে তাকাতে হয়নি। শিশুগুলো আজ বৈদেশী ইশকুলেও পড়ায় ।
তোমাদের বেড়ে ওঠা চলতেই থাকে।
আমার ঘরের পলেস্তরা খুলে পড়ল গতকাল, হঠাৎ করেই।
তোমাদের পাড়ায় আসতেই শুরু হলো কী যে হুলুস্থুল;
উৎসুক মুখগুলো প্রতীক্ষায় উঠে এলো সহবাস ছেড়ে,
—নেতা, খালি হুকুম করেন...
—নেতা, কী হইছে কন...
—নেতা, আপনার লাগি জীবনও দিতাম পারি...
ভালোবাসার আতিশয্যে নিজেকে এবার একত্রিত করি,
এই, তোমরা এতো ব্যস্ত হয়ো না, আমার ঘরের সামান্য পলেস্তরা খসেছে মাত্র...
অসমাপ্ত কথায় তোমরা এসে জড়ো করো,
—নেতা, কী বলেন!
—নেতা, আপনি আমাদের বাবার মতো...
—নেতা, মুই আছি, খালি কইয়া দেহেন...
আকাশের দিকে তাকাই সমর্পিত বিস্ময়ে,
আপন জেনেই তো নিজেই এলাম আজ তোমাদের কাছে, যদি কেউ পলেস্তরাকে প্রতিস্থাপন করে দাও...!
হঠাৎ বিস্ময় হয়ে ওঠে নির্বাক। এক মুহূর্ত আগে যেখানে ছিলো প্রত্যাশার প্রতীক সেখানে বিমুখ লোকালয়;
কথার অরণ্যে বাজে মেঘের গর্জন,
—মানে, আমার বউটা পোয়াতি...
—মানে, কাইল আমার ছাওয়াল চলি যাবে...
—মানে, ইস্, যদি একদিন আগে জানতাম!
এবার ঘুরে দাঁড়াই। অপ্রতিরোধ্য বিদায়ের পথে পড়ে থাকে বুভুক্ষু মঞ্চ। রুপায়িত দৃশ্যে ফিরে যায় অগ্নিনির্বাপণ।
চিত্রের গভীর ভেদ করে হেসে ওঠে বল্গাহারা ঠোঁট,
সময়কেই শুধু চেনা হলো না!