সৈ য় দ রু ম্মা ন
তৃপ্তির হাসিতে লাবণী বড়ুয়া: সৈয়দ রুম্মান
ভার্সেটাইল সিঙ্গার এই কথাটার মানে নিয়ে হয়তো অনেক মত থাকতে পারে তবে আমার দেখা হয়েছিলো ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে এক ভার্সেটাইল সিঙ্গারের সাথে। সিডির মোড়ক উন্মোচন পর্বের শেষেই উপস্থাপিকা ফারজানা আহমেদ ঘোষণা দিলেন, এবার প্রোজেক্টরে ভেসে উঠবে শিল্পীর গাওয়া গান ও তার দৃশ্যায়ন। সুরের ঝঙ্কারে আমার বুঝতে দেরি হচ্ছিলো না যে, গানে আর যাই হোক প্রাণের অপ্রতুলতা নেই। সুমিষ্ট কণ্ঠ আর সুরে যেন ক্রমশই বুঁদ হয়ে যাচ্ছিলাম। পাশে বসা রাজু আলীকে সাথে সাথে ধন্যবাদ দিতে ভুল করলাম না– আমাকে আর আদনান পাভেল কে ধরে নিয়ে আসার জন্য। বারবারই ভাবছিলাম কি আছে তারপর, শেষ পর্যন্ত কি ভার্সেটাইল সিঙ্গার এই কথাটার যথার্থতাটা থাকবে। ভাবনার মাঝপথেই উপস্থাপিকা এসে আবারও ঘোষণা দিলেন, এবারে মঞ্চে আসছেন ভার্সেটাইল সিঙ্গার লাবণী বড়ুয়া। ঝলমলে দৃষ্টিনন্দন শাড়িতে যখন ধরলেন "শখি ভাবনা কাহারে কয়" তখন আমিও ভাবতে শুরু করি -সুরের আকাশে তুমি যেগো শুকতারা/ আমায় করেছো একি চঞ্চল বিহ্বল দিশাহারা...বুঁদ হতে হতেই নিজেকে এবার প্রশ্ন করি- একেই কি তবে বলে ভার্সেটাইল! আমাকে বিস্মিত করে আবারও লাবণী তাঁর কারুকাজখচিত ঢেউ দোলানো কণ্ঠে গেয়ে উঠলেন দেশের গান "আমায় গেঁথে দাও না মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা"। আমি তাঁর গানের সাঁকো বেয়ে বারবার চলে যাচ্ছিলাম স্কুল পেরোনো সেই জাফরান রোদমাখা দিনে। সেখান থেকে এবার নিয়ে এলেন তাঁর মোড়কবন্দি মৌলিক গান "কী গভীরে" আর তখনই আমার ভেতরে হয়ে উঠলেন ভার্সেটাইল সিঙ্গারের এক আশ্চর্য প্রতীক হিশেবে। বিলেতের মাটিতে আমার অনেক সৌভাগ্য হয়েছিলো বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে যাওয়ার কিন্তু এবারই প্রথম গানের সিডি'র মোড়ক উন্মোচনে এসে নিজের সময় এবং উপস্থিতিকে মনে হল সার্থক। সুরের মূর্ছনায় সন্ধ্যার রঙ যতই পরিবর্তিত হচ্ছিলো ততই যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম সুরের অতলে। নিজের মোড়কবন্দী গানের পর আবারও দেখালেন তাঁর বহুমাত্রিক কণ্ঠের যাদু; গেয়ে উঠলেন "ও মোর ময়নাগো", "এ কি সোনার আলায় জীবন ভরিয়ে দিলে", "জল পড়ে পাতা নড়ে", "ধিন ধিন তা না না"... আর এর মাঝেই নিজেকে এক সময় হারিয়ে ফেলি এক যাদু-বাস্তবতায়। হাড় কাঁপানো শীতে সে যেন ছড়িয়ে দিল এক গাল তৃপ্তির হাসি যে হাসির ইঙ্গিতে বুঝতে অসুবিধা হলো না, ভার্সেটাইল সিঙ্গারের আরেক নাম লাবণী বড়ুয়া!
(প্রথম প্রকাশ মার্চ ২০১৪, উইকলি দেশ, লন্ডন )
সৈয়দ রুম্মানঃ কবি, আবৃত্তিশিল্পী, উপস্থাপক এবং প্রেসিডেন্ট, সাউথ এশিয়ান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ।
তৃপ্তির হাসিতে লাবণী বড়ুয়া: সৈয়দ রুম্মান |
ভার্সেটাইল সিঙ্গার এই কথাটার মানে নিয়ে হয়তো অনেক মত থাকতে পারে তবে আমার দেখা হয়েছিলো ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে এক ভার্সেটাইল সিঙ্গারের সাথে। সিডির মোড়ক উন্মোচন পর্বের শেষেই উপস্থাপিকা ফারজানা আহমেদ ঘোষণা দিলেন, এবার প্রোজেক্টরে ভেসে উঠবে শিল্পীর গাওয়া গান ও তার দৃশ্যায়ন। সুরের ঝঙ্কারে আমার বুঝতে দেরি হচ্ছিলো না যে, গানে আর যাই হোক প্রাণের অপ্রতুলতা নেই। সুমিষ্ট কণ্ঠ আর সুরে যেন ক্রমশই বুঁদ হয়ে যাচ্ছিলাম। পাশে বসা রাজু আলীকে সাথে সাথে ধন্যবাদ দিতে ভুল করলাম না– আমাকে আর আদনান পাভেল কে ধরে নিয়ে আসার জন্য। বারবারই ভাবছিলাম কি আছে তারপর, শেষ পর্যন্ত কি ভার্সেটাইল সিঙ্গার এই কথাটার যথার্থতাটা থাকবে। ভাবনার মাঝপথেই উপস্থাপিকা এসে আবারও ঘোষণা দিলেন, এবারে মঞ্চে আসছেন ভার্সেটাইল সিঙ্গার লাবণী বড়ুয়া। ঝলমলে দৃষ্টিনন্দন শাড়িতে যখন ধরলেন "শখি ভাবনা কাহারে কয়" তখন আমিও ভাবতে শুরু করি -সুরের আকাশে তুমি যেগো শুকতারা/ আমায় করেছো একি চঞ্চল বিহ্বল দিশাহারা...বুঁদ হতে হতেই নিজেকে এবার প্রশ্ন করি- একেই কি তবে বলে ভার্সেটাইল! আমাকে বিস্মিত করে আবারও লাবণী তাঁর কারুকাজখচিত ঢেউ দোলানো কণ্ঠে গেয়ে উঠলেন দেশের গান "আমায় গেঁথে দাও না মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা"। আমি তাঁর গানের সাঁকো বেয়ে বারবার চলে যাচ্ছিলাম স্কুল পেরোনো সেই জাফরান রোদমাখা দিনে। সেখান থেকে এবার নিয়ে এলেন তাঁর মোড়কবন্দি মৌলিক গান "কী গভীরে" আর তখনই আমার ভেতরে হয়ে উঠলেন ভার্সেটাইল সিঙ্গারের এক আশ্চর্য প্রতীক হিশেবে। বিলেতের মাটিতে আমার অনেক সৌভাগ্য হয়েছিলো বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে যাওয়ার কিন্তু এবারই প্রথম গানের সিডি'র মোড়ক উন্মোচনে এসে নিজের সময় এবং উপস্থিতিকে মনে হল সার্থক। সুরের মূর্ছনায় সন্ধ্যার রঙ যতই পরিবর্তিত হচ্ছিলো ততই যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম সুরের অতলে। নিজের মোড়কবন্দী গানের পর আবারও দেখালেন তাঁর বহুমাত্রিক কণ্ঠের যাদু; গেয়ে উঠলেন "ও মোর ময়নাগো", "এ কি সোনার আলায় জীবন ভরিয়ে দিলে", "জল পড়ে পাতা নড়ে", "ধিন ধিন তা না না"... আর এর মাঝেই নিজেকে এক সময় হারিয়ে ফেলি এক যাদু-বাস্তবতায়। হাড় কাঁপানো শীতে সে যেন ছড়িয়ে দিল এক গাল তৃপ্তির হাসি যে হাসির ইঙ্গিতে বুঝতে অসুবিধা হলো না, ভার্সেটাইল সিঙ্গারের আরেক নাম লাবণী বড়ুয়া!
(প্রথম প্রকাশ মার্চ ২০১৪, উইকলি দেশ, লন্ডন ) |
No comments:
Post a Comment